* সংসদ নির্বাচন ঘিরে ২৪টি পরিকল্পনা * সীমানা নির্ধারণে গেজেট প্রকাশ ১৫ সেপ্টেম্বর * ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন * সেপ্টেম্বর মাসে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক * দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন ১৫ নভেম্বর * ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে ভোট গ্রহণ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে ইসি। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী সংসদ নির্বাচন হবে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে এবং তফসিল ঘোষণা হবে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রোডম্যাপ ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
আখতার আহমেদ বলেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ২৪টি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে, যা চলবে অক্টোবর পর্যন্ত। এ ছাড়া নভেম্বরে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। তিনি আরও বলেন, ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী সংসদ নির্বাচন হবে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে এবং তফসিল ঘোষণা করা হবে চলতি বছরের ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে। চার কমিশনারের বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এই কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন হয়েছে।
এর গত বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, আমরা যে কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) করেছি, সে কর্মপরিকল্পনা আপনাদের জানাব। আমি ঢাকার বাইরে থাকায় একটু পিছিয়ে পড়েছি। এটা আমার টেবিলে এখন আছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করেন।
এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব এক বৈঠকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ অনুমোদন করেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে। ইসির কর্মকর্তারা জানান, রোডম্যাপে নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো কখন কোনটি শেষ হবে, তা উল্লেখ রয়েছে। ওই সময়সূচি ধরে নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করবেন ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ইসি সূত্র জানায়, রোডম্যাপে সেপ্টেম্বর মাসে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে কমিশন। এ ছাড়া আইন সংস্কার, সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্তকরণ, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, পর্যবেক্ষক নিবন্ধন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নির্বাচনী সামগ্রী ক্রয়, প্রবাসীদের ভোটাধিকার ও ভোটের ব্যালট-ফরমসহ বিভিন্ন ধরনের খাম মুদ্রণ, ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করা, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ এবং নির্বাচনী প্রশিক্ষণ কোন সময়ের মধ্যে শেষ করা হবে তা উল্লেখ থাকবে রোডম্যাপে। তবে রোডম্যাপে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা এবং ভোটের তারিখ উল্লেখ থাকবে না।
ইসির কর্মকর্তারা আরও জানান, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে চলতি বছরের ডিসেম্বরে তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। ওই লক্ষ্য সামনে রেখে এ রোডম্যাপ ঘোষণা করতে যাচ্ছে কমিশন। তারা জানান, নির্বাচনি প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো চলমান রয়েছে। রোডম্যাপে এসব কাজ কোন সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে, সেই সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হবে। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন নিয়ে মানুষের শঙ্কা কিছুটা হলেও কমবে।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশের লক্ষ্য ধরা হয়েছে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর। এ গেজেট প্রকাশের মধ্য দিয়ে দেশের ৩০০টি আসনের ভৌগোলিক সীমানা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারণ হবে। পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রস্তুত জিআইএস (ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা) ম্যাপ ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করা হবে। এই ডিজিটাল ম্যাপের মাধ্যমে প্রতিটি আসনের সীমানা আরও স্পষ্ট ও নির্ভুলভাবে উপস্থাপন সম্ভব হবে।
নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রাথমিক নিবন্ধনের জন্য ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। এরপর দলগুলোর কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে ৩০ সেপ্টেম্বর। এই প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে নতুন দলগুলোর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি হবে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, কারাবন্দিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে ভোটের অন্তত দুই সপ্তাহ আগে দেশের বিভিন্ন কারাগারে ব্যালট পেপার পৌঁছে দেওয়া হবে। এতে কারাবন্দি ভোটাররাও তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। ইসি মনে করে, এই উদ্যোগ ভোটাধিকারকে সবার জন্য সমানভাবে কার্যকর করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা পর্যবেক্ষণের জন্য দেশীয় সংস্থাগুলোর নিবন্ধন কার্যক্রমও এগিয়ে চলছে। ১৫ নভেম্বরের মধ্যে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ইসি। নিবন্ধিত সংস্থাগুলো নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে পর্যবেক্ষক পাঠাতে পারবে। নির্বাচন কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘোষিত রোডম্যাপের প্রতিটি ধাপ সময়মতো সম্পন্ন করার জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের দাবি, এই প্রস্তুতি একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পথ সুগম করবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা
- আপলোড সময় : ২৮-০৮-২০২৫ ১০:৪৪:৪৯ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৮-০৮-২০২৫ ১০:৪৪:৪৯ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ